গাংনীর মৎস্য গ্রাম খ্যাত জুগিরগোফা

 মৎস্য
গাংনীর মৎস্য গ্রাম খ্যাত জুগিরগোফা

গাংনী উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে লতায়-পাতায়, সবুজে-শ্যামলে ঘেরা গ্রামটির নাম জুগিরগোফা। গ্রামের চারপাশে শুধু পুকুর আর পুকুর fish-pic-6

পুকুর পাড়ে সবজি চাষ। মৎস্য চাষে পুরস্কার লাভ

 

গাংনী উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে লতায়-পাতায়, সবুজে-শ্যামলে ঘেরা গ্রামটির নাম জুগিরগোফা। গ্রামের চারপাশে শুধু পুকুর আর পুকুর

পুকুর পাড়ে সবজি চাষ। মৎস্য চাষে পুরস্কার লাভ

আমিরুল ইসলাম অল্ডাম: গাংনী উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে লতায়-পাতায়, সবুজে-শ্যামলে ঘেরা গ্রামটির নাম জুগিরগোফা। গ্রামের চারপাশে শুধু পুকুর আর পুকুর। ‘মাছে ভাতে বাঙ্গালী’ এই সত্যটা এই গ্রামে না আসলে জানা যায়না।মৎস্য চাষে বিপস্নব ঘটিয়েছে এই জুগিরগোফা গ্রামের নারী-পুরুষ।মৎস্য চাষ করেই মানুষের আমিষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যের প্রোটিন ও মিনারেল যোগান দিতে এবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে পুকুর পাড়ে সবজি চাষ শুরু করেছে কয়েকজন বেকার যুবক।বেকারত্ব ঘোচাতে কোমর বেঁধে নেমেছে শিড়্গিত যুবক শাহজাহান ও জাকিরুল । ইতোমধ্যেই পুকুর পাড়ে সবজি চাষ করে উপজেলা পর্যায়ে সেরা মৎস্য ও সবজি চাষী হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছেন জুগিরগোফা গ্রামের শাহজাহান। শাহজাহান ছাড়াও এই গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ মৎস্য চাষের সাথে জড়িত।বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে লাভবান না হওয়ায় এই গ্রামের লোকজন মৎস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছে এবং এই অর্থ দিয়ে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে স্বচ্ছলতা ও মর্যাদার সাথে জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,জুগিরগোফা গ্রামের পশ্চিম দিকের গ্রাম সংলগ্ন মাঠে সাড়ে ৩ একর জমিতে নতুন ভাবে খননকৃত পাশাপাশি ৮ টি পুকুরে নানা জাতের মাছ চাষ করা হচ্ছে।মাছের মধ্যে রয়েছে,পাঙ্গাস,সিলভার, রুই, কাতলা,নাইলোটিকা,তেলাপিয়া,গ্রাসকার্প,জাপানী রুই,কৈ,শিং,ইত্যাদি।মাছের লাফালাফিতে পুকুরের পানিতে ঢেউ তুলেছে।এ মনোরমদৃশ্য দেখে মন আনন্দে ভরে ওঠে।
এমনি করেই চলছে মাছ চাষ। কিন’ মৎস্য চাষী শাহজাহান থেমে থাকেনি। মাছ চাষের পাশাপাশি আর কি করা যায়। এমনি ভাবনা তাকে তাড়া করে ফিরছিল।একদিন দেখা হলো কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পাশের গ্রাম ষোলটাকা গ্রামের নাজিমউদ্দীনের সাথে। নাজিমউদ্দীনের পরামর্শানুযায়ী ৮টি পুকুরের ১০-১৫ ফুট চওড়া পাড়ের প্রায় ৫ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের পুষ্টিকর ফল ও সবজি চাষ করা হয়েছে।সবজি চাষের মধ্যে রয়েছে, পেঁপে, ঢেঁড়স, বেগুন,মরিচ,লাউ, চাল-কুমড়া, মিষ্টি-কুমড়া, লাল শাক, পুই শাক ইত্যাদি।জানা গেছে,পুকুর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন করে সারিবদ্ধভাবে সাড়ে ৫শ’পেঁপে,৪ হাজার ঢেঁড়স চারা,৪শ’ বেগুন,৪ হাজার মরিচের চাষ করা হয়েছে।এছাড়াও বিভিন্ন সবজি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতিদিন প্রায় দেড়মন করে ঢেঁড়স বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।নতুন পুকুরে মাছ চাষ করে আশানুরুপ লাভ না হলেও আশা করা যাচ্ছে দু’এক বছর পর কাং্ি‌খত লাভ হবে।
এব্যাপারে মাছচাষী শাহজাহান জানায়, নিজ উদ্যোগে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে পুকুর কেটে মাছ চাষের পাশাপাশি সবজি চাষ করেছি।পুুকুর পাড়ে কেন সবজি চাষ করলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, পুকর পাড়ে সবজি চাষ করায় পুকুর পাড় আগাছামুক্ত রাখার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ এবং বিভিন্ন গাছের শিকঁড়ে পুকুরের পাড়ের মাটি ধরে রাখতে পারে সেজন্যে পাড় ভেঙ্গে পড়ে না। তিনি মনে করেন,মৎস্য চাষীদের প্রত্যেকের পুকুর পাড়ে জমি ফেলে না রেখে ফল মূল ও সবজি চাষ করা দরকার। তিনি আরও জানান, সরকারী অনুদান বা সহযোগিতা পেলে আমার এই উদ্যোগ আরও সম্প্রসারিত করা সম্ভব হতো।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post