গরু আসছে রাজধানীতে

cow

স্টাফরিপোটার: কোরবানি ঈদ সামনে রেখে রাজধানীর পশুরহাটগুলোতে প্রচুর গরু-ছাগল আসতে শুরু করেছে। বেশি দামে বিক্রির আশায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে কোরবানির পশু আনছেন কৃষক ও বেপারীরা। কেনার আগে দাম যাচাই-বাছাই করতে হাটে ভিড় করছেন ক্রেতারাও।

সপ্তাহ-খানেক পরেই কোরবানির ঈদ। তাই ধীরে ধীরে সরগরম হতে শুরু করেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। সকাল-কি-রাত, ২৪ ঘণ্টাই ট্রাক ভর্তি করে গরু-ছাগল আসছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার পশুর হাটে।

বেশিরভাগ গরু আসছে রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, গাইবান্ধাসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে। তুলনামূলক বেশি লাভের আশায় রাজধানীতে গরু আনছেন বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

ঈদের এখোনো বেশ কিছু দিন বাকি থাকায় কেনার চেয়ে দাম যাচাইয়েই বেশি ব্যস্ত ক্রেতারা। পশুর হাটের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইজারাদাররা।

এদিকে, চাহিদার তুলনায় দেশে বেশি সংখ্যক কোরবানির পশু রয়েছে দাবি করে ভারতীয় গরু-ছাগলের প্রবেশ ঠেকানোর জোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ছোট-বড় মিলিয়ে এবার রাজধানীতে ২১টিরও বেশি পশুর হাট বসেছে। হাটের চার পাশে বিচ্ছিন্নভাবে গরু বেঁধে রেখেছেন বেপারীরা। আর ইজারাদাররা হাটে সিসি ক্যামেরা লাগাতে ব্যস্ত। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে রাজধানীর গাবতলীর হাটে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

হাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ট্রাক থেকে গরু নামানো হচ্ছে। হাটের প্রায় অর্ধেক অংশ এখনো খালি। বাকি অর্ধেক অংশে পশু থাকলেও ক্রেতা নেই। গুটিকয়েক দর্শনার্থীকে অবশ্য ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে।

তবে হাটে গরুর দাম ছাড়ছেন না বিক্রেতারা। এমনকি ক্রেতা মনে না হলে কাউকে গরুর দাম পর্যন্ত বলছেন না তারা। এবারের হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গরুর পাশাপাশি রয়েছে মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট ও দুম্বা। ছোট ও মাঝারি গরুর দাম হাঁকছেন ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। বড় গরুর দাম সর্বোচ্চ ১৪ লাখ। ছাগলের দাম সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা। দুম্বা সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা। উটের দাম ৮ থেকে ১৪ লাখ টাকা। আর সর্বোচ্চ ১ লাখ ১০ হাজার টাকার মহিষ উঠেছে এই হাটে।

তিলাম হোসেন নামে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে আসা এক বিক্রেতা বলেন, ৪টা গরু আনতে ট্রাক ভাড়া লেগেছে ১৬ হাজার টাকা। তাই গরুর দাম তুলনামূলক একটু বেশি। এছাড়া গরুর খাবারের দাম বেড়েছে। জাহিন চৌধুরী নাম এক ক্রেতা বলেন, গরু দেখছি, যাচাই-বাছাই করছি। বিক্রেতারা সঠিক দাম বলছেন না। তারা দাম দেখছেন।

রাজধানীর অন্যান্য হাটের চিত্রও অভিন্ন। রাজধানীর হাটগুলোতে এ পর্যন্ত যত গরু এসেছে, এগুলোর মধ্যে ভারতীয় কোনো গরু দেখা যায়নি। একাধিক গরুর বেপারির সঙ্গে কথা হয় এ নিয়ে। তারা জানান, এবার দেশেই প্রচুর গরু আছে। ৯ সেপ্টেম্বরের আগেই হাট গরুতে ভরে যাবে। এ মুহূর্তে হাটে ভারতীয় গরু নেই। কিন্তু হঠাৎ করে সরকার ভারতীয় গরু ছেড়ে দিলে দেশি গরুর খামারি ও বেপারিরা সমস্যায় পড়বেন বলে তারা মনে করছেন।

হাটের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া নাগরিক জীবনে পশু আগেভাগে ক্রয় করে লালন-পালনেও নানা ঝক্কি-ঝামেলা। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নগর কর্তৃপক্ষ ঈদের তিন দিন আগে থেকে পশু বিক্রির নিয়ম বেঁধে দিয়েছে। সে হিসেবে ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হবে পশু বিকিকিনি। তবে এবার ঈদ একদিন পিছিয়ে যাওয়ায় হাটে পশু বিক্রি হবে মোট ৪ দিন।

Post a Comment

Previous Post Next Post