মেহেরপুরে সুষ্ঠ সংরক্ষণ অভাবে লাখ লাখ টাকার আম নষ্ট হয়

Mengo_pic-[1]

আবু লায়েছ লাবলু, :আম উৎপাদনে রাজশাহী জেলার পরই দ্বিতীয় স’ানে মুজিবনগর খ্যাত মেহেরপুর জেলার অবস’ান। ১৯৭১ সালের ১৭এপ্রিল ছায়াঘন মেহেরপুরের মুজিবনগরের বিশাল আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মন্ত্রীপরিষদের শপথ গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। তখন থেকে মুজিবনগরকে বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী বলা হয়। ঐতিহাসিক গুরম্নত্ব যতেষ্ঠ রয়েছে। সেই পবিত্র ভূমি মেহেরপুর আম উৎপাদনে দ্বিতীয় স’ান দখল করে থাকলেও আজও এখানে আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে আম সংরক্ষন করা হয় না। ফলে প্রতি বছর আম চাষীদের লাখ লাখ টাকার আম নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় সরকারী ও ব্যক্তিগত মালিকানায় ছোট বড় মিলে প্রায় ৬ হাজার আম বাগান রয়েছে। বর্তমানে বাগান গুলো আরো সমপ্রসারণ করা হচ্ছে। চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় জেলার প্রতি আম বাগানে আশানুরম্নপ আম ধরেনি। এবার আশানুরম্নপ আমের উৎপাদন হবে না বলে কৃষি বিভাগ মনে করে। কৃষকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং আম উৎপাদন বাড়াবার জন্য প্রতিবছর প্রশিক্ষণ, আম গাছের পরিচর্যা, সার প্রয়োগ ,বয়স্ক আম গাছের পরিবর্তে নুতন নুতন উচ্চ ফলনশীল জাতের চারা রোপন করা এবং রোগ ও পোকা মাকড় দমন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস’া প্রয়োজন। আমের ফলন বেশি হলে যোগাযোগ ও পরিবহনের আসুবিধার জন্য কৃষকরা ভালো দাম পায় না। বাগান মালিকগন দালালদের খপ্পরে পড়ে অল্প দামে আম বিক্রি করে থাকে। অনেক বাগান মালিক পাকা আম সংরক্ষন করার নিয়ম জানে না এবং সংরক্ষন করার কোন ব্যবস’া না থাকায় প্রতি বছর বাড়িতে জাগ দেয়া আম পচে নষ্ট হয়ে যায়। আম বাগানের উপর বা বাগান করার জন্য কৃষি ব্যাংক কৃষকদের মাঝে ঋন বিতরন করলে আম বাগানের আরো সমপ্রসারন ঘটবে। ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ সেন্টার স’াপন করা হলে মেহেরপুরের ফল নষ্ট হবে না। এই এলাকায় আম বাগানের উন্নয়ন , ফলন বৃদ্ধি, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং নুতন জাত সমপ্রসারণে নুতন কলা-কৌশল ব্যবহার করার জন্য মেহেরপুরে একটি আম গবেষণাগার স’াপনা হলে পার্শ্ববর্তী জেলাতে ও আম বাগান সমপ্রসারণ হবে। আমের ফলন বাড়াবার জন্য গত কয়েক বছর ধরে কৃষি বিভাগ গাছে মুকল আসার পর হতে চাষীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে আসছে । ইতিমধ্যে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ৪ সহস্রাধিক চাষীকে প্রশিক্ষন দিয়া হয়েছে। অধিকহারে চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য তাদের মাঝে রোগ প্রতিরোধ , দমন ও আম গাছের পরিচর্যা করার আম বাগান ভালো আছে। তবে আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় বিগত বছরগুলো থেকে চলতি বছর আমের উৎপাদন বৃদ্ধি হয়নি। ভারত থেকে উন্নতজাতের আমের চারা আসছে। এগুলো হলো সুবর্ণ, মল্লিকা , হাইব্রিড-১০, আম্রপলি, বারোমাসি ও রত্না ইত্যাদি। চাষীরা উৎপাদনে বেশি ফলন পাওয়ায় এগুলোর উপর জোর দিচ্ছে। সেই সাথে দেশি জাতের ন্যাংড়া,ফজলী,ক্ষীরসাপাতি, হিমসাগর, গোপালভোগ, মিসরিভোগ, বোম্বাই, গোপালখাস, কোহিতুর, রক্ষনভোগ, কিষানভোগ ও অন্যান্য জাতের উন্নতির জন্য সরকারিভাবে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে জাত উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন। অর্থকারী ফসল হিসাবে আমের জাত উন্নয়ন হলে এখানকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। আম গাছ রোপন হতে শুরম্ন করে ফল না আসা পর্যনত্ম উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষককে প্রশিক্ষন দিতে হবে। এ ব্যপারে কৃষি বিভাগকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া দরকার।

Post a Comment

Previous Post Next Post