৪ খাতে শিগগিরই বিদেশি শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া

 

KBDNEWS ডেস্ক : মালয়েশিয়া সরকার ম্যানুফ্যাকচারিং, নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ ও আসবাব শিল্পখাতে শিগগিরই বিদেশি শ্রমিক নেয়ার অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পরিবহণ মন্ত্রী লিও টিয়ংলাই।

মালয়েশিয়ার স্টার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চার খাতের উদ্যোক্তারা শ্রমিক সংকট ঘুচাতে বিদেশি শ্রমিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আবেদন করায় মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। মন্ত্রী লিও টিয়ংলাই বলেন, মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা ইতোমধ্যে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য কাজ করছে এবং তা শেষ হলে অন্যা খাতের ওপর থেকেও ধাপে ধাপে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।

অন্য খাতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা একটি স্বচ্ছ-জবাবদিহিতামূলক অব্যর্থ ব্যবস্থা তৈরির অপেক্ষায় আছি। এরপর অন্য খাতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে এগোব।

লিও টিয়ংলাই বলেন, উৎপাদনের জন্য শ্রমিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কাজেই বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ব্যাপারে উদ্যোক্তরা যদি অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকে তাহলে এটি জাতীয় অর্থনীতির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।

তিনি জানান, সরকার বিভিন্ন শিল্পখাতের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতিটি খাতের পরিস্থিতি ভালোমতো আন্দাজ করেছে। তবে মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ২৯ এপ্রিল দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি জানিয়েছিলেন, মালয়েশিয়া সরকার শিগগিরই দেশটিতে পুনরায় বিদেশি শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে ঘোষণা দেবে।

তিনি বলেন, বিদেশি শ্রমিকদের বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত। আমি জানি, এজন্য অনেক খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার তাদের বক্তব্য শুনছে এবং স্থগিত হয়ে যাওয়া বিষয়ে যথাসময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।

আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের সরকারে মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তবে এর পরদিনই বিদেশি শ্রমিক নেয়া স্থগিতের ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।

দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে কেবল ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক নেয়া শুরু করে মালয়েশিয়া। এরপর গতবছর বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার জনশক্তির জন্য ‘সোর্স কান্ট্রির’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সেবা, উৎপাদন, নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে কর্মী নেয়ার আলোচনা শুরু হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ত জায়েম এবং বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমঝোতা স্মারকে সই করেন। ঐ চুক্তির আওতায় মালয়েশিয়া তাদের চারটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘

‘জিটুজি প্লাস’ বাংলাদেশি কর্মী নেবে বলে অনুষ্ঠানের পর জানানো হয়।

কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই মালয়েশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী হামিদি বাংলাদেশসহ সব ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে জনশক্তি আমদানি স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে দেশটির উদ্যোক্তাদের চাপে শেষ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হলো।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post