আলামত সংগ্রহ সিআইডির

সিআইডির

ষ্টাফরিপোটার : বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরি হওয়ার ঘটনায় ব্যাংক থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছে সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট,গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সিআইডি এসব আলামত জব্দ করে।
এদিকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের বাংলাদেশ কার্যালয়ের কর্মকর্তার সাথে আজ শুক্রবার আলোচনায় বসবে এ মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।, এছাড়াও ইন্টারপোলের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করবে তদন্ত সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার সিআইডির উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সাইফুল ইসলাম এসব কথা জানান।
সিআইডি সূত্র জানায়, তদন্ত দল ব্যাংকে যায়। সেখানে তারা কার্যক্রম চালায়। এ সময় ব্যাংক হতে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়।
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের আগেই জানানো হয়েছিল, গতকাল বৃহস্পতিবার ছুটির দিনেও তারা যেন ব্যাংকে উপস্থিত থাকেন। সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন জানান, মামলাটি তারা গুরুত্বের সাথে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

রিজার্ভের অর্থ চুরি যাওয়ার ৪০ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে ওই মামলা করা হয়। মতিঝিল থানার ১৫ নম্বর মামলাটির তদন্তের ভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। রিজার্ভের অর্থ চুরি যাওয়ার ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তকাজ শুরুর পরই গত বুধবার সিআইডির একটি তদন্ত দল দিনভর বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে সেখানকার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছে। পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা নেয়। গতকালও সিআইডির দলটি বাংলাদেশ ব্যাংকে যায়।
এরপরই সিআইডির উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সাংবাদিকরা এ সময় জানতে চান, আজ আপনারা কি করলেন। এর জবাবে তিনি বলেন, ফরেন এক্সচেঞ্জ এবং সিকিউরিটি সার্ভিল্যান্স ইকুইপমেন্ট আমরা জব্দ করেছি।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাথে আপনাদের কথা হয়েছে কি না-জানতে চাইলে ডিআইজি সাইফুল ইসলাম বলেন, এফবিআইয়ের সাথে আমরা আলোচনা চালাব। এফবিআইয়ের বাংলাদেশ কার্যালয়ের যিনি প্রধান তার সাথে কাল (শুক্রবার) আলোচনায় বসব। এছাড়া ইন্টারপোলের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

সিআইডির একটি সূত্র জানায়, এ ঘটনায় সদ্য পদত্যাগ করা গভর্নর ড. আতিউর রহমান এবং অপসারণ করা দুই ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম ও নাজনীন সুলতানাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

মামলার পর গ্রেফতার ও আটকের বিষয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর তিনটি সংস্থা নিজেরা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে মামলার নথিপত্র ঐদিন রাতেই হস্তান্তর করে মতিঝিল থানা পুলিশ। অপরদিকে র‌্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশও কাজ শুরু করেছে। যদিও র‌্যাবের পক্ষে আরও কয়েকদিন আগে থেকেই ছায়া তদন্ত শুরু করা হয়।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট সমন্বিতভাবে কাজ করবে। সংস্থাগুলোর উদ্দেশ্য একটাই, ঘটনার রহস্য বের করা। এ ঘটনায় সমন্বয় করার জন্য ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অর্থ চুরির মামলার এজাহারে বলা হয়, ৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিলিং রুমের (যেখান থেকে লেনদেনের পরামর্শ আদান-প্রদান করা হয়) সুইফট সিস্টেমের ত্রুটি ধরা পড়ে। তবে প্রথমে সেটিকে স্বাভাবিক সমস্যা হিসেবে মনে করা হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকল্প পদ্ধতিতে সুইফট সফটওয়্যার চালু করে কিছু অননুমোদিত বার্তার বিষয়টি নিশ্চিত হন ডিলিং রুমের কর্মকর্তারা। ঐদিন দুপুরেই ই-মেইল ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে অননুমোদিত লেনদেনগুলো স্থগিত রাখার অনুরোধ পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকের কাছে। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনসহ মোট ছয়টি ব্যাংকের কাছে ‘স্টপ পেমেন্ট বা অর্থ পরিশোধ বন্ধ’ অনুরোধ বার্তা পাঠানো হয়।

Post a Comment

Previous Post Next Post